মোঃ জসিম উদ্দিন,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ বিগত কয়েকদিনে কাঠফাঁটা রোদের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাবাসীর জনজীবন।

রোদে পুড়ছে প্রকৃতি, বইছে তাপপ্রবাহ, স্বস্তি নেই কোথাও। জনজীবনে কাহিল অবস্থা। দুপুরের রোদে খোলা আকাশের নিচে হাঁটলে গরম বাতাসের হলকায় মুখমন্ডল পুড়ে যাওয়ার উপক্রম। শরীর ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে ঘামে। সূর্য এতটাই তেঁতে উঠেছে যে, বাইরে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকুন্ড।
একটু প্রশান্তির জন্য মানুষ ছুটছেন গাছের ছায়া কিংবা শীতল কোনো স্থানে। তাছাড়া গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে শিশুরা পুকুর কিংবা নদীর পানিতে পার করছে সময়। শুধু দিনের বেলাতেই নয়, রাতেও গরমে মানুষ ঘুমাতে পারছে না।

শুক্রবার (১৫ জুলাই) সরেজমিনে খানসামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। ভ্যাপসা গরমে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে কর্মজীবী মানুষজন। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। আর এই খা খা রোদে মানুষের মুখে দেখাচ্ছে মলিনতার ছাপ। প্রখর এই রোদে খাওয়ার স্যালাইনই তাদের একমাত্র ভরসা।

গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেয়া কয়েকজন দিনমজুর বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে কাজ হাতে উঠছে না। সকালে কাজে আসছি কিন্তু দুপুরের কড়া রোদ আর সহ্য হচ্ছে না। তাই কাজের ফাঁকে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছি।’

সুশীল চন্দ্র নামের একজন কৃষক বলেন, তীব্র গরমের মাঝে পাঁট কাটতে যেয়ে অবস্থা একেবারে নাজেহাল। ঠান্ডা পানির সাথে খাওয়ার স্যালাইন মিশিয়ে পান করলেও স্বস্তি মিলছে না।

সুমতি বালা নামের ৫২ বছর বয়সী এক মহিলা বলেন,মুই ছোট থাকি মোর বোধে এইকম অইত আর গরম দেখো নাই খালি এইবারেরই প্রথম দেখুনি।
আগের বছরত গরম হইছোলও কিন্তু এইকম হয় নাই। কি করিবেন এলা এইকম করিয়াই চলিবার নাগিবে।
তাছাড়াও এই অতিরিক্ত গরমে খানসামার জনজীবন গৃহবন্ধী হয়ে পড়েছে। ফলে দেখা দিয়ে জ্বর, সর্দি, কাশির প্রাদুর্ভাব। এ বিষয়ে একাধিক গ্রাম ডাক্তারসহ এলাকার প্রবিণরা জানান, বিগত কয়েকদিনে গরমের কারণে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। গরম বেশি পড়ায় আর অস্বাস্থ্যকর খাবারে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি।

এদিকে তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে ঠান্ডা পানীয়’র। ফুটপাতে প্রচুর পরিমানে বিক্রি হচ্ছে আখেঁর রস ও বিভিন্ন ফলমূলের সাথে লেবুর শরবত। কয়েকটি কনফেকশনারী দোকানদার জানান, তীব্র গরমে কোমলপানীয়, জুস ও আইসক্রিম খুব চলছে।
এছাড়া উপজেলার কয়েকটি হাটে দেখা গেছে, ইলেক্ট্রনিক্স দোকানগুলোতে ব্যাটারি চালিত ফ্যান ও পাখা বিক্রির ধুম লেগেছে।

জানা গেছে, এই মৃদুতাপদাহ শনিবার পর্যন্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বায়ু মন্ডলে জলীয়বাষ্প বেশি ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় গরম এতো বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবীদরা।